ইউরোপের শেনজেন ভিসার মতো এবার নতুন ভিসা পদ্ধতি চালু হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যেও। সর্বসম্মতিক্রমে এই অঞ্চলের জন্য প্রস্তাবিত ‘ইউনিফায়েড ট্যুরিজম ভিসা’ বা একক ভিসা ব্যবস্থার অনুমোদন দিয়েছে গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিল বা জিসিসিভুক্ত দেশগুলো। এর ফলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খাতে সূচনা হলো নতুন এক যুগের।
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) আবুধাবি-ভিত্তিক সংবাদমাদ্যম দ্য ন্যাশনাল এক প্রতিবেদনে জানায়, সম্প্রতি ওমানে জিসিসি মন্ত্রীদের ৪০তম বৈঠকের পর সংস্থাটির মহাসচিব জসিম আল বুদাউই একক ভিসা ব্যবস্থায় অনুমোদনের ঘোষণা দেন।
২০২৪ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ছয় দেশের ব্লকজুড়ে এই ব্যবস্থা কার্যকর হবে বলে জানা গেছে। এটি চালু হলেই একটি ভিসায় জিসিসিভুক্ত ছয় দেশ- সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, বাহরাইন, ওমান, কুয়েত ও কাতারে ভ্রমণ করা যাবে।
এ ঘোষণার পর জসিম আল বুদাউই বলেন, ইউনিফায়েড গালফ ট্যুরিস্ট ভিসা এমন একটি প্রকল্প, যা জিসিসির ছয়টি দেশের মধ্যে বসবাসকারী ও পর্যটকদের চলাচল আরও সহজ করতে অবদান রাখবে। অর্থনৈতিক ও পর্যটন খাতেও নিঃসন্দেহে এ প্রকল্পের ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
গত মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থমন্ত্রী আবদুল্লাহ বিন তৌক বলেছিলেন, ইউনিফায়েড ভিসা হলো জিসিসির ২০৩০ লক্ষ্যমাত্রা পূরণের অন্যতম প্রধান উপাদান। এর মূল লক্ষ্য, ভ্রমণ খাতের বৃস্তিতি বাড়ানোর মাধ্যমে অর্থনীতির চাকা গতিশীল করা।
জানা গেছে, নতুন এই উদ্যোগের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের এই ছয় দেশে পর্যটক সংখ্যা ১২ কোটিতে উন্নীত করতে চায় জিসিসি। এইচএসবিসির তথ্যানুসারে, বৈশ্বিক অর্থনীতির খারাপ পরিস্থিতির মধ্যেও ভালো অবস্থানে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের পর্যটন খাত। বিশেষ করে, করোনা মহামারি পরবর্তী সময়ে এই খাত থেকে আয় বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জিসিসির একক ভিসা ব্যবস্থা মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ‘গেম চেঞ্জার’ হবে বলেই মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
ইউরোপের ২৭টি দেশে ‘শেনজেন ভিসা’চালু রয়েছে, যার মাধ্যমে এই দলভুক্ত যেকোনো একটি দেশের ভিসা দিয়ে বাকি ২৬টি দেশে ভ্রমণ করা যায় ও যে কোনো কাজে একটি দেশে সর্বোচ্চ ৯০ দিন থাকা যায়। ইউরোপ ভ্রমণকারীদের কাছে এই ভিসা সোনার হরিণের মতো।
শেনজেনভূক্ত দেশগুলো হলো- সুইজারল্যান্ড, জার্মানি, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ড, নরওয়ে, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, ফ্রান্স, ফিনল্যান্ড, বেলজিয়াম, অস্ট্রিয়া, আইসল্যান্ড, ইতালি, এস্তোনিয়া, গ্রিস, চেক রিপাবলিক, মাল্টা, লুক্সেমবার্গ, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, স্পেন, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, লিচেনস্টাইন, সুইডেন, হাঙ্গেরি ও ক্রোয়েশিয়া।
সূত্র: দ্য ন্যাশনাল