সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাসের সেইফহোমে আশ্রয়ে থাকা গৃহকর্মীদের যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের দায়ে একজন উপসচিবকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে সরকার। উপসচিব মেহেদী হাসানকে এর আগে সাময়িক বরখাস্ত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা হয়েছিল। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তার চাকরিচ্যুতির প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ২১তম বিসিএস এর প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা মেহেদী রিয়াদ দূতাবাসে কাউন্সেলরের দায়িত্বে থাকার সময় সেখানে আশ্রিত গৃহকর্মীদের যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ উঠার পর তদন্তের উদ্যোগ নেয়া হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রিয়াদ দূতাবাসের সেইফহোমে আশ্রিত কতিপয় গৃহকর্মীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় মেহেদী হাসানকে ওই পদ থেকে ২০২১ সালের ২৪শে জানুয়ারি অবমুক্ত করা হয়। এরপর এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে ২০২১ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরে অসদাচণের অভিযোগে বিভাগীয় মামলা দিয়ে ওই বছরের ১০ই মার্চ তাকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়। ২০২১ সালের ৮ই এপ্রিল লিখিতভাবে কারণ দর্শানোর জবাব দাখিল করে ব্যক্তিগত শুনানির আবেদন করেন মেহেদী হাসান। ব্যক্তিগত শুনানিতে দাখিলকৃত জবাব ও বক্তব্য সন্তোষজনক বিবেচিত না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে ওই বছরের ২০শে জুন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তদন্তে মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে দূতাবাসের সেইফহোমে আশ্রিত কতিপয় গৃহকর্মীকে অপ্রয়োজনীয় একান্ত সাক্ষাৎকারের নামে অশ্লীল প্রশ্ন ও আচরণসহ বিভিন্নভাবে হেনস্থা করা এবং যৌন নির্যাতন (ধর্ষণ) করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০২২ সালের ২০শে ডিসেম্বর মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে অসদাচণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
তদন্ত প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র পর্যালোচনা করে সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী মেহেদীকে গুরুদণ্ড দেয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়ে তাকে দ্বিতীয়বার কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়। ওই নোটিসে কেন তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত বা অন্য কোনো গুরুদণ্ড দেয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর জবাবে মেহেদী তার বিরুদ্ধে আনীত এবং তদন্তে প্রমাণিত অভিযোগের বিপরীতে কোনো সন্তোষজনক বক্তব্য দিতে সক্ষম হননি বলে উল্লেখ করা হয় প্রজ্ঞাপনে।