কম খরচে স্কলারশিপ করার স্বপ্ন অনেকেরই থাকে। তাছাড়া স্বপ্নের দেশ হিসাবে অনেকের কাছে কানাডাকে রাখা হয় সবার শীর্ষে। তবে স্বপ্নদ্রষ্টা হবার পাশাপাশি বিচক্ষণ এবং জ্ঞানী হওয়া উচিত। ঠিক তেমনিভাবে কানাডায় পড়াশোনা করতে চাওয়া প্রতিটি পড়ুয়াদের উচিত কানাডায় পড়াশোনার খরচ ঠিক কেমনটা হতে পারে সে-সম্পর্কে। আশা করি কানাডায় পড়াশোনার খরচ সম্পর্কিত সকল তথ্য নিয়ে সাজানো এই আর্টিকেলটির সাথেই থাকবেন।
শুরুতেই আমরা কিছু লো বাজেটের বিশ্ববিদ্যালয় এবং একই সাথে কোয়ালিটিফুল পড়াশোনার ব্যবস্থা আছে এমন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির একটি লিষ্ট চেক করবো।
আরো পড়ুন স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে কখন কানাডায় আসা উচিত !
ইউনিভার্সিটি অব ডালহৌসি: সর্বনিম্ন বাৎসরিক টিউশন ফি হিসাবে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি কানাডিয়ান ডলারে প্রায় ১৮,০০০ ডলারের মতো অর্থ চার্জ করে থাকে। পাবলিক এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসাবে আপনি মেডিসিন, ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজি, আইন, ম্যানেজমেন্ট, আর্কিটেকচার, সায়েন্স, এগ্রিকালচার বিজনেস, আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্স ইত্যাদি সাবজেক্টে পড়ার সুযোগ পাবেন।
কেপ ব্রিটন ইউনিভার্সিটি: এই কেপ ব্রিটন ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠানে পড়তে হলে বছরে আপনাকে গুনতে হবে ১৪,০০০ কানাডিয়ান ডলারের মতো অর্থ। খরচ অল্প হলেও এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আপনি ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজি, এডুকেশন, পাবলিক হেলথ, নার্সিং, সেল্টিক কালচার ইত্যাদির মতো সাবজেক্টগুলিতে পড়ার সুযোগ পাবেন।
কেপ ব্রিটন ইউনিভার্সিটি: বছরে প্রায় ১৩,০০০ কানাডিয়ান ডলারের মতো অর্থ খরচ করতে পারলেই কেপ ব্রিটন ইউনিভার্সিটিতে পড়তে পারবেন আপনিও। আর সাবজেক্ট হিসাবে থাকবে ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজি, এডুকেশন, পাবলিক হেলথ, নার্সিং, সেল্টিক কালচার ইত্যাদি সেকশনে পড়ার সুযোগ।
কানাডায় পড়াশোনার খরচ বাঁচাতে বৃত্তির সুযোগ পাবে যোগ্য শিক্ষার্থীগণ। এক্ষেত্রে যোগ্যতা হিসাবে প্রতিটি আগ্রহী শিক্ষার্থীকে যাচাই করা হবে একাডেমিক ফলাফল ও গবেষণার অভিজ্ঞতা, বিভিন্ন বাহ্যিক এবং অর্থবহ কাজে সম্পৃক্ততা ও আইইএলটিএসের স্কোরের মাপকাঠিতে। এই মাপকাঠিতে কতৃপক্ষ যাদের উপযুক্ত মনে হবে তারাই কিছুটা কম খরচে কিংবা কোনো কোনো ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ফ্রিতে পড়ার সুযোগ পাবেন।
কানাডায় পড়াশোনার খরচ আসলে দুইভাবে নির্ধারিত করা হয়। একটি হলো প্রাতিষ্ঠানিক ফি এবং অন্যটি হলো টিউশন ফি। যদিও টিউশন ফি এর ক্ষেত্রে যারা প্রাইভেট পড়ে বা পড়তে চায় কেবল তাদেরই পে করতে হয়। যাইহোক, আপনি যদি কানাডায় স্নাতক প্রোগ্রামে ভর্তি হোন তাহলে আপনাকে গুনতে হবে ৭ লাখ ৩০ হাজার থেকে ৮ লাখ ৮০ হাজার টাকার মতো।
আবার একই ভার্সিটিতে যদি আপনি মাস্টার্স কোর্স করতে চান তাহলে আপনাকে গুনতে হবে প্রায় ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ কানাডিয়ান ডলার। সুতরাং বুঝতেই পারছেন বৃত্তি ছাড়া কত্ত খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে যাদের একাডেমিক রেজাল্ট ভালো তারাই কেবল কম খরচে অর্থ্যাৎ বৃত্তি নিয়ে কানাডার মতো দেশে পড়াশোনার করার সুযোগ লুফে নিতে পারেন।
আপনি চাইলেই কিন্তু নিজে পার্ট টাইম জব করে নিজের পড়াশোনার খরচটাকে কিছুটা সাপোর্ট দিতে পারেন। যেহেতু কানাডায় পড়াশোনার খরচের পরিমাণ বেশি সেহেতু পার্ট টাইম জব খুঁজে নেওয়াটাই সময়ে সেরা সিদ্ধান্ত বলে আমি মনে করি।
কানাডায় কিন্তু স্টুডেন্ট ভিসায় শিক্ষার্থীরা পার্ট টাইম জব করার সুযোগ নিতে পারে। তবে এক্ষেত্রে বেঁধে দেওয়া হয়েছে বেশ সহজ এবং যুক্তিযুক্ত একটি শর্ত। শর্তটি হলো পার্ট টাইম জবের ক্ষেত্রে প্রতিটি ফরেনার শিক্ষার্থী যেকোনো প্রতিষ্ঠানে বা ব্যাক্তিগতভাবে প্রতি সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা সময় পর্যন্ত কাজ করার সুযোগ পাবেন। হিসাব করলে দেখা যায় সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা সময় দিয়ে কাজ করলে আপনি প্রতি মাসে প্রায় দেড় হাজার কানাডিয়ান ডলারের মতো ইনকাম করার সুযোগ পাবেন। যা কিন্তু একেবারেই মন্দ নয়।
আপনি যদি শেয়ার করা বাসায় ভাড়া থাকেন, যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাস ব্যবহার করেন, বাসায় রান্নাবান্না করে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারেন ফোন এবং ইন্টারনেটের ব্যাপারে শেয়ারিং টেকনিক ফলো করতে পারেন তাহলে বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৬০/৭০ হাজার টাকার মতো খরচ হতে পারে। তাও আবার প্রতি মাসে।
জেনে নিলেন কানাডায় পড়াশোনার খরচ সম্পর্কে! এবার সবকিছু গুছিয়ে নেওয়ার পালা। সিদ্ধান্ত থেকে শুরু করে বাজেট…পড়াশোনার রুটিন থেকে শুরু করে পার্ট টাইম জব করার সময়, সবকিছু নিয়েই ভাবুন। নিজের স্বপ্ন পূরণে সময় দিন। পরবর্তী জেতার আনন্দঘন মুহুর্তটুকু হোক একান্তই আপনার।