
আপনি কি এমন একটি দেশে পড়াশোনা করতে যেতে চান যেখানে শিক্ষার মান বিশ্বসেরা, টিউশন ফি তুলনামূলকভাবে কম, আর পার্ট-টাইম কাজের সুযোগ রয়েছে? তাহলে ডেনমার্ক স্টুডেন্ট ভিসা ম্যানেজ করে ইউরোপের শান্ত, সুন্দর, ও উন্নত দেশ ডেনমার্ক বেছে নিতে পারেন।
ডেনমার্কের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইউরোপের সবচেয়ে প্র্যাকটিক্যাল কারিকুলাম ফলো করে। সো এই পড়াশোনা করে জব সেক্টরে কাজ খুঁজতে আপনাকে কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না। পাশাপাশি এই দেশের অনেক প্রোগ্রামে স্কলারশিপ পাওয়া যায়। এমনকি কিছু কোর্সে সম্পূর্ণ ফ্রি শিক্ষার ব্যবস্থাও থাকে।
ডেনমার্কে গেলে দেখবেন প্রায় সব মাস্টার্স ও ব্যাচেলর কোর্সই ইংরেজিতে পড়ানো হচ্ছে। তাই ভাষা নিয়ে আপনাকে কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না। সেই সাথে আছে পার্ট-টাইম কাজের সুযোগ। মানে এখানে স্টুডেন্টরা সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে পারবে। আর কোর্স শেষ হওয়ার পর ২ বছর পর্যন্ত জব সার্চ ভিসাও পাওয়া যাবে।
এগুলো QS World Ranking অনুযায়ী ইউরোপের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে গণ্য হয়। তাছাড়া আমাদের ওয়েবসাইটে আপনি ডেনমার্কের জনপ্রিয় কিছু বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে ডিটেইলস গাইডলাইন পেয়ে যাবেন। চাইলে তা পড়ে নিতে পারেন।
এবার আসি কি কি যোগ্যতা থাকলে আপনি ডেনমার্ক স্টুডেন্ট ভিসার জন্য এপ্লাই করতে পারবেন সে ব্যাপারে:
শিক্ষাগত যোগ্যতা: ডেনমার্ক স্টুডেন্ট ভিসা আবেদনের আগে আপনার ভালো শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে। ব্যাচেলর প্রোগ্রামের জন্য ১২ বছরের শিক্ষাজীবন মানে এইচএসসি কমপ্লিট করতে হবে। আর মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য লাগবে চার বছর মেয়াদী ব্যাচেলর ডিগ্রি।
ভাষা দক্ষতা: ভাষা দক্ষতা হিসাবে থাকতে হবে IELTS স্কোর ন্যূনতম ৬.০ থেকে ৬.৫ এবং TOEFL স্কোর ৮০+!
অ্যাডমিশন লেটার: ডেনমার্কের যেকোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার থাকতে হবে।
ফাইনান্সিয়াল প্রুফ: বছরে কমপক্ষে DKK ৬,৫৮৮ x ১২ মাস অথ্যাৎ টোটাল DKK ৭৯,০৫৬ এর প্রুফ থাকতে হবে। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১২,৫০,০০০ টাকার মতো পড়বে।
মেডিকেল ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স: সবশেষে হেলথ সার্টিফিকেট ও পুলিস রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
বর্তমানের হিসাব অনুযায়ী ডেনিশ স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন ফি মূলত DKK ২,০২৫ পড়ে। মানে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩২,০০০ টাকার মতো।
এরপর টিউশন ফি হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্সভেদে বছরে গড়ে DKK ৪৫,০০০ থেকে ১,২০,০০০ লাগবে। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭,০০,০০০ থেকে ১৮,০০,০০০ টাকার মতো।
সবশেষে লিভিং কস্ট মানে বাসস্থান + খাবার + যাতায়াতের জন্য প্রতি মাসে প্রায় ১,০০,০০০ টাকা এবং মেডিকেল ইন্স্যুরেন্স ও অন্যান্য খরচ হিসাবে প্রতি বছর প্রায় ৫০,০০০ থেকে ৬০,০০০ টাকার মতো লাগবে। ইনটোটাল খরচ পড়বে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা!
১. শুরুতে আপনার কোর্স ও ইউনিভার্সিটি বেছে নিন। এরপর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে সরাসরি অনলাইন অ্যাপ্লাই করুন। বলে রাখা ভালো সাধারণত এই আবেদন সময় নির্ধারিত হয় মার্চ থেকে এপ্রিল এবং সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরে।
২. এরপর ইউনিভার্সিটি থেকে Conditional Offer Letter পেলে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট পাঠিয়ে Final Offer নিন।
৩. পরবর্তীতে ভিসা আবেদনের প্রস্তুতি হিসাবে আপনাকে ST1 Form অনলাইনে পূরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে এই লিংকটি গুগলে কপি পেস্ট করুন nyidanmark.dk! লিংকে গিয়ে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড করবেন। মাসে পাসপোর্ট, ছবি, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, অ্যাডমিশন লেটার, ইন্স্যুরেন্স ইত্যাদি আপলোড দেবেন।
৪. সবশেষে আপনাকে ভিসা ফি জমা ও বায়োমেট্রিকস দিতে হবে। এক্ষেত্রে VFS Global Dhaka অফিসে গিয়ে এই কাজ সারতে হবে। এবং ভিসা প্রসেসিং টাইম হিসাবে অপেক্ষা করতে হবে ৬-৭ সপ্তাহ।
সবশেষে বলবো যারা ডেনমার্ক স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন করে রিজেক্ট হতে চান না তারা ব্যাংক স্টেটমেন্টে যথেষ্ট ফান্ড রাখবেন। আর কোর্স এবং ক্যারিয়ারের মধ্যে লজিক্যাল সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করবেন। ভিসা ইন্টারভিউতে কনফিডেন্ট থাকলে দেখবেন ইজিলি পাশ করতে পারছেন। মনে রাখবেন সঠিক পরিকল্পনা থাকলে ইউরোপে পড়াশোনা আর স্বপ্ন নয়। বরং বাস্তব হতে পারে খুব সহজেই।