বাংলাদেশ থেকে অনেক শিক্ষার্থী কানাডায় প্রতি বছর পড়তে আসেন। অনেকে আসার জন্য চিন্তা করেন। আবার অনেক খরচের কথা না ভেবেই কানাডায় পড়তে আসার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু মাঝপথে বেশ কিছু টাকা খরচ করে পরে টাকা জোগাড় না করতে না পেরে থেমে যান। ফলে কানাডাও আসা হয় না আবার অনেক টাকা শুধু শুধু খরচ হয়ে যায়। আজকে আমরা কানাডায় পড়তে আসার প্রাথমিক খরচের একটি ধারণা দিব। তবে এই খরচ ব্যাক্তি ভেদে ভিন্ন হতে পারে।
১. পাসপোর্ট : প্রথম দরকার বাংলাদেশি পাসপোর্ট বানানো। এই মুহূর্তে একটি পাসপোর্ট বানাতে খরচ ৩৪৫০ টাকা।
২. আই ই এল টি এস কোচিং : কানাডায় আসতে হলে ভাল ভাবে আই ই এল টি এস এর প্রস্তুতি নিতেহবে। যারা ইংলিশে খুবই দক্ষ নেতাদের এই খরচের দরকার নাই। অনলাইনে এই বিষয়ে হাজার – হাজার কন্টেন্ট কয়েছে। একটি একটি ভালোমানের উনিভার্সিটিতে ভর্তি হতে হলে ৬ থেকে ৭.৫ পর্যন্ত আই ই এল টিএস স্কোর প্রয়োজন হয়। যারা কোচিং করতে চান তাদের কোচিং এবংমডেল টেস্ট বাবদ কমপক্ষে ৪০,০০০/-(চল্লিশ হাজার )টাকা খরচ ধরতেহবে।
৩. আই ই এল টি এস পরীক্ষার ফি : বাংলাদেশ থেকে এখন আই ই এল টি এস পরীক্ষার ফি ২০ হাজার ২৫০ টাকা। তবে ডলারের দামের তারতম্যের কারণে এই ফি কম বেশি হয়।
৪. কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটিতে আবেদন : আই ই এল টি এস একটি ভাল স্কোর পাবার পর কানাডার ইউনিভার্সিটিগুলিতে আবেদন করতে হবে। ৪/৫ টি ইউনিভার্সিটি তে আবেদন করা ভাল। আপনি যে বিষয়ে পড়তে চান সে বিষয়ে ভাল ৪/৫ টি ইউনিভার্সিটি ঠিক করুন , তাহলে কেউ না কেউ আপনাকে অফার লেটার পাঠাবে। এক একটি ইউনিভার্সিটিতে আবেদন ফি ১০০ থেকে ১৫০ কানাডিয়ান ডলার। এই বাবদ আপনার খরচ হবে ৪০ হাজার টাকা।
৫. পুলিশ ক্লিয়ারেন্স : বাংলাদেশ থেকে একটি পুলিশ ক্লিনরিয়ান্সের দরকার হয়। সোনালী ব্যাংক বা বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঁচ শত টাকার একটি চালান জমা দিয়ে হয়।
৬. সার্টিফিকেট ট্রান্সকিপ্ট ও কুরিয়ার খরচ : আপনার সার্টিফিকেটের ট্রান্সকিপ্ট উঠতে হবে এবং তা কানাডার ইউনিভার্সিটিতে কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠাতে হবে। এ বাবদ খরচ হবে চার হাজার টাকা।
৭. নোটারি এবং অ্যাসেট ভ্যালুশন খরচ : আপনার অধিকাংশ ডকুমেন্ট নোটারি করতে হবে, এর পাশাপাশি আপনার অভিভাবকের অ্যাসেটের মূল্য এভাউলাশন করতে হবে। এই বাবদ আপনার খরচ হতে পারে ১৫ হাজার টাকা।
৮. ট্যাক্স ফাইল : ১৮ বছর হলে কানাডায় আবেদন করতে হলে ট্যাক্স ফাইল জমা দিতে হয়। এ বাবদ খরচ হবে ৫ হাজার টাকা।
৯. বায়োমেট্রিক : কানাডায় পড়তে আসতে হলে বায়োমেট্রিক প্রয়োজন হয়। তার খরচ হবে ৮৫ কানাডিয়ান ডলার যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬ হাজার ৫০০ টাকা।
১০. ভিসা এপ্লিকেশন ফি : কানাডার ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। এই আবেদন ফি ১৫০ ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় ১১,৫০০/- ( এগারো হাজার পাঁচ শত ) টাকা।
১১. মেডিকেল ফি : কানাডায় আসার জন্য কানাডিয়ান সরকারের অনুমোদনপ্রাপ্ত নির্ধারিত কয়েকটি মেডিকেল সেন্টার আছে বাংলাদেশে । সে জায়গা থেকে আপনার মেডিকেল করতে হবে। তার ফি ১৭০ কানাডিয়ান ডলার। যার খরচ দাঁড়াবে বাংলাদেশি টাকায় ১৩,০০০/- (তের হাজার) টাকা।
১২. বিমান ভাড়া : কানাডার বিমান ভাড়া বাবদ প্রায় ১ লক্ষ টাকা খরচ হবে। যত আগে কাটবেন খরচ তত কম হবে। দেরি করে কাটলে খরচ বেশি হবে।
১৩. কেনাকাটা : নতুন দেশ কানাডা। এই খানে গরম কাপড় আনতে হবে। আরও অনেক কিছু কিনতে হয় নতুন একটি দেশে আসতে হলে। এই বাবদ খরচ হবেকম পক্ষে ৫০,০০০/- ( পঞ্চাশ হাজার টাকা )
১৪. টিউশন ফি : কানাডায় পড়তে আসলে অগ্রিম টিউশুনি ফি দিতে হয়। ইউনিভার্সিটিভেদে ফি কম বেশি হয়। বাংলাদেশি টাকায় ১ সেমিস্টারের খরচ কমপক্ষে ৩,০০,০০০/- ( তিন লক্ষ ) টাকা খরচ হবে।
১৫. প্রথম কয়েক মাস চলার খরচ : কানাডায় আসার আগে কয়েক মাসের চলার মত টাকা আনতে হবে। এখানে লিভিং এক্সপেন্স পৃথিবীর অনেক দেশের চেয়ে বেশি। আন্ডার গ্রেডের স্টুডেন্টদের কাজের অনুমতি থাকে না। তার উপরের গ্রেডের স্টুডেন্টরা কাজ করতে পারে। এসেই যে কাজ পাওয়া যাবে তারনিশ্চয়তা নেই। তাই কমপক্ষে ৫ হাজার কানাডিয়ান ডলারের কমবেশি হাতে আনা ভাল। যা বাংলাদেশি টাকায় ৪,০০,০০০/- ( চার লক্ষ ) টাকা। যারা সেলফ ফান্ডে পড়তে আসবেন তাদের জন্য এই খরচ দশ লক্ষ টাকা শুরুতে খরচ আছে । ব্যক্তিভেদে কম বেশি হতে পারে খরচ। যারা স্কলারশিপ নিয়ে আসবেন তাদের জন্য খরচ বেশ কম হবে। এখানে কোনো কনসাল্টেন্সি ফি ধরা হয়নি। কানাডার ওয়েব সাইট সব সুন্দর মতো লেখা আছে। তাছাড়া প্রতিটি বিষয়ে ও লাইন কন্টেন্ট আছে। শুধু শুধু টাকা খরচ করে কারো সাহায্য নেবার দরকার নাই। যারা আপনার আগে কানাডায় পড়তে গিয়েছেন তাদের খুঁজে বের করুন। আশা করা যায়, তারা আপনাকে বিনা মূল্যে সাহায্য করবে।