শিরোনাম:
মহরম কত তারিখে ২০২৫ সালে: মহরম মাসের ইতিহাস | ফজিলত | কারবালার শিক্ষা বাংলাদেশ থেকে ভিসা ছাড়া ভ্রমণ করা যায় কোন কোন দেশে কানাডা জব ভিসা প্রসেসিং কেমন এবং খরচ কত  বাংলাদেশের সেরা ভ্রমণ স্থান: বাংলাদেশের সেরা পর্যটন কেন্দ্র বাংলাদেশে সস্তায় ট্রেন ভ্রমণ করার উপায়: কিভাবে টিকিট কাটবেন এবং কি কি করবেন  মাত্র ৫০-৫৫ হাজার টাকায় ৫ দিনের থাইল্যান্ড ট্যুর প্ল্যান  দেশে ফিরেও কোথাও ঠাঁই মেলেনি প্রবাসী তমিজ উদ্দিনের দেশে রেমিট্যান্স পাঠাবেন যেভাবে: বাংলাদেশের শীর্ষ রেমিট্যান্স প্রদানকারী দেশসমূহ জার্মানিতে DAAD MIDE Scholarships স্কলারশিপে থাকছে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা মাসিক ভাতা  জাপানের শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের প্রবেশে প্রধান প্রতিবন্ধকতা

২ লাখ টাকা বেতনে সৌদি এসে দেখেন থাকার জায়গাও নেই!

প্রবাস প্রতিদিন
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ২২ আগস্ট, ২০২৩

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবের জেদ্দা, দাম্মাম, জুবাইল, আল-খারিজ, নাজরান, খোবারসহ বিভিন্ন এলাকায় কাজের সন্ধানে ঘুরছেন বাংলাদেশ থেকে নতুন ভিসায় আসা অনেক প্রবাসী। এই দেশে যাদের মাধ্যমে এসেছেন, তাদেরও আর খোঁজ পাচ্ছেন না তারা।

google newsFollow us on Google news

প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে অনেকেই ভাগ্য বদলে আশায় পাড়ি জমান সৌদি আরবে। তাদের অনেকেই প্রলোভনে পড়ে চার-পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে প্রবাসে আসেন।তাদের ভিসা দেওয়ার সময় বিভিন্ন ভিআইপিমানের কোম্পানিতে, রেস্টুরেন্টে, সুপার শপে, আবাসিক হোটেলে চাকরি দেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু দেশটিতে আসার পর তা আর ঠিক থাকে না। তখনই বিপাকে পড়েন প্রবাসীরা।

প্রায় ২ লাখ টাকা বেতনের লোভে দালালের মাধ্যমে সৌদি আরবে এসেছেন পাবনার হামিমুল পাশা জয়। কিন্তু এসে দেখেন, তার চাকরি নেই। এমনকি থাকার জায়গাটাও পাচ্ছেন না তিনি। হামিমুল পাশা বলেন, ‘আপন খালাতো ভাই মো. জুয়েল মিয়া আমাকে আরামকো কোম্পানিতে ফোরমেনের চাকরি দেওয়ার নাম করে সৌদি আরব নিয়ে এসেছেন।

বেতন ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা বলে আমাকে ফুসলিয়ে প্রবাসে নিয়ে আসেন। এ দেশে এসে দেখি চাকরি নেই, আকামা তিন মাসের দিলেও থাকার জায়গা নেই, খাওয়ার জায়গা নেই।’

তিনি আর বলেন, ‘আমি এখন রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছি। দেশে যেতে চাই, কীভাবে যাব তা-ও জানি না। দেশ থেকে পরিবার টাকা চাচ্ছে। বউ, বাচ্চা আছে কী করব বুঝতে পারছি না।অল্প কয়েক দিন আছে আকামার মেয়াদ, তারপর অবৈধ হয়ে যাব। নিজের মরদেহ দেশে যাবে কি না জানি না। আমার মতো কেউ এমন ভুল করবেন না, আত্মীয়-স্বজন বা দালালদের মিষ্টি কথায় পা দেবেন না।’

গাজীপুর শ্রীপুরের আবদুল কাইয়ুম বলেন, ‘আমার চাচাতো ভাইয়ের ভিসায় ৫ লাখ টাকা খরচ করে সৌদি আরব এসেছি। চাচাতো ভাই চাকরি দেওয়া নাম করে আমাকে তার বাসায় কিছু দিন রেখেছিলেন।

এখন চাকরি না দিয়ে উল্টো তার বাস থেকে বের করে দিয়েছেন। এর আগেও আমার মতো আরও পাঁচজনকে টাকার বিনিময়ে এ দেশে এনেছিলেন তিনি। তাদের কাউকেই তিনি চাকরি দেননি। অবৈধ থাকার অপরাধে এদের মধ্যে একজন জেল খেটে অবশেষে দেশ চলে গেছেন। আর আমি ধারদেনার বোঝা মাথায় নিয়ে কাজ খুঁজে বেড়াচ্ছি। জীবনে কী হবে জানি না। তবে কেউ কারও মিথ্যে প্রলোভনে পড়ে সৌদি আরবে না আসার অনুরোধ জানাই।’

আরেক ভুক্তভোগী কুষ্টিয়ার মোহাম্মদ শাহেদ। তিনি বলেন, ‘মায়ের ভাই মামা, শুনেছি সকলের চেয়েই ভালা। মামা যে ভিসার দালালে পরিণত হয়েছে, তা আগে জানতাম না। গত ৫ মাস আগে মামা আমাকে সৌদি আরব নিয়ে এসেছেন। দেশটিতে নিয়ে এসে আমাকে এক জায়গায় কাজ দিয়েছিলেন। কিন্তু ৫ মাস ধরে সেই কোম্পানি থেকে বেতন পাইনি। বেতন চাওয়ায় রুম থেকে বের করে দিয়েছেন মামা।’

তিনি আরও বলেন, ‘কার কাছে যাই, কী করি। আমার আকামাও নেই। পরিবারের কথা ভেবেই রাস্তার ধারে বসে শরবত বিক্রি করছি। পুলিশ এলে পালিয়ে যাই। কবে পুলিশ ধরে দেশে পাঠিয়ে দেয় আল্লাই জানেন।

বিদেশে যারাই আসবেন বুঝে-শুনে আসবেন। কারও কথায় বা লোভে পড়ে আসবেন না। দেশটিতে লাখো মানুষ বেকার ঘুরছে। কারও আকামা নেই, কারও কাজ নেই। ভিসার পেশার সঙ্গে মিল রেখে একই মালিকের কাজ না করলে সৌদি আরব সরকারের আইনে অবৈধ। ধরা পড়লে আর্থিক জরিমানা, জেল ও সবশেষে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’

এদিকে, অবৈধ প্রবাসীদের দেশে ফেরত যেতে দেওয়ার জন্য সৌদি আরব প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। গত ৩ আগস্ট সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রীর সঙ্গে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিক যারা বিভিন্ন কারণে অবৈধ হয়ে পড়েছেন এবং দেশে ফেরার জন্য আবেদন করেছেন, তাদের দ্রুত দেশে ফেরার সুযোগ প্রদানের জন্য দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলারবিষয়ক উপমন্ত্রী আলি বিন আব্দুর রহমান আল ইউসুফকে অনুরোধ জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত।

রাষ্ট্রদূত বলেন, যে সকল বাংলাদেশি কর্মীদের নামে কর্মক্ষেত্র থেকে পলায়নের মামলা (হুরুব) রয়েছে, ইকামার মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে এবং যারা দেশে ফেরার জন্য আবেদন করেছেন, তাদের দেশে ফেরার জন্য ছাড়পত্র পেতে কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হয়।

এ সকল অভিবাসীদের বেশিরভাগ কর্মহীন অবস্থায় দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে আর্থিক সংকটে পড়েন, যা বিদেশে তাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক। এ সকল অবৈধ অভিবাসীদের দ্রুত বাংলাদেশে ফেরার সুযোগ দিতে সৌদি পররাষ্ট্র উপমন্ত্রীকে অনুরোধ করা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ